তোকমা এক প্রকার গুল্ম জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ। ছোট কালো রঙের একটি বীজ তোকমা, যা মূলত বিভিন্ন মিষ্টি পানীয় কিংবা শরবত তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়ও তোকমা বীজ অন্যতম একটি উপাদান। এটি স্থানভেদে সবজা বীজ, মিষ্টি বাসিল, ফালুদা বীজ কিংবা তুর্কমারিয়া বীজ হিসেবে পরিচিত। বহু গুণ রয়েছে বীজটির।
তোকমা খুবই পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি বীজ দানা। এটি শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।
আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও চীনা মেডিসিনে এর বহুল ব্যবহার রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, প্রোটিন, আয়রন ও ক্যালরি রয়েছে। যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তোকমা শরীরের নানা রকম সমস্যা প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর।
তোকমা দানার উপকারিতা-
ওজন কমাতে : দেহের ওজন কমাতে এ বীজের জুড়ি নেই। তোকমার ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এর নানা উপাদান দেহের চর্বি কমাতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা বাড়তি ক্ষুধা দূর করে এবং পেট দীর্ঘক্ষণ পরিপূর্ণ থাকার অনুভূতি দেয়।
এসিডিটি দূর করে : তোকমা এসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে তোকমা পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর খেতে হবে। এছাড়াও তোকমার বীজ পানিতে পরিপূর্ণ থাকে, যা দেহের ক্ষতিকর পদার্থও দূর করতে সহায়ক।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ : রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর তোকমা। মূলত দেহের বিপাকক্রিয়া ধীর করে দেয় তোকমা। ফলে কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তরের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। এ কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিস যাঁদের রয়েছে, তারা এটি নিয়মিত খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : তোকমা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। সামান্য তোকমা অল্প পানিতে ভিজিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর তা দুধে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়াও এটি হজমের সমস্যাও দূর করতে সহায়তা করে।
সুস্থ ত্বক ও চুল : ত্বকের নানা সমস্যায় তোকমা ব্যবহার করা যায়। এ জন্য কিছু তোকমা বীজ গুঁড়ো করে তা নারিকেল তেলের সঙ্গে মাখিয়ে ত্বকে লাগাতে হয়। এটি নানা চর্মরোগ নিরাময়ে কাজ করে। এটি একজিমা ও সোরিয়াসিস নিরাময়ে কার্যকর। সুস্থ চুলের জন্য এটি নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।
ঠান্ডার সমস্যায় : তোকমা বীজে রয়েছে ঠান্ডা প্রতিরোধী উপাদান। এটি আপনার দেহকে ঠান্ডার বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা গড়তে সহায়তা করবে। সর্দি-কাশি থেকে দূরে থাকতে চাইলে তাই নিয়মিত তোকমা খাওয়া যেতে পারে।
ওমেগা-৩ : ওমেগা-৩ শরীরের জন্য ভীষণ দরকারি একটি উপাদান। উদ্ভিদ ভিত্তিক ওমেগা অ্যাসিডের সবচেয়ে ভালো একটি উৎস হচ্ছে তোকমা দানা। তাই তোকমা খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
তোকমা দানা মূলত পানি সাথে ঘন্টা খানেক ভিজিয়ে সেটির শরবত হিসেবে খাওয়া হয়। তবে একটা বিষয়, এটি অবশ্যই পানি ভিজিয়ে রাখতে হব। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এর দানা গুলো আস্তে আস্তে ফুলে সেটি কিছুটা বড় ও কালো তোকমা দানার উপরে সাদা প্রলেপ পড়ে। তখন সেটি শরবত হিসেবে খাওয়া হয়। মিল্কশেক বা বিভিন্ন জেজার্ট আইটেমে এটি ব্যবহার করা হয়। অনেকে এটি ইসবগুলের ভূষির সাথে মিশিয়েও খান।
তোকমার অপকারিতা-
১। কারো শরীরের অস্ত্রোপচার হয় তাহলে খাবেন না।
২। শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন।
৩। গর্ভবতী নারীদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
কোথায় পাবেন ফ্রেশ তোকমা দান?
কেনাকাটায় পাবেন ফ্রেশ তোকমা দানা।