দানাদার খাবারের মধ্যে কাজু বাদামের জুড়ি নেই। কাজু বাদাম গাছের আদিনিবাস ব্রাজিলে হলেও সারাবিশ্বের উষ্ণ আবহাওয়ার দেশগুলোতে এটি চাষ হয়ে থাকে।
কাজু বাদাম চিবিয়ে ও রান্না করেও খাওয়া যায়। এটি রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে ফিরনি, সেমাইয়ে অনন্য স্বাদ যোগ করে।
কাজু বাদামে এত পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়, যা প্রায় রান্না করা মাংশে পাওয়া প্রোটিনের সমান। এ ছাড়া এতে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং শর্করার পরিমাণ কম থাকে।
সুস্বাদু কাজু বাদাম প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনসহ পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ একটি বীজ। এতসব পুষ্টি উপাদানের কারণে এটির স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। হাড়ের জন্য অনেক উপকারী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ওজন কমাতে, হার্টকে ভালো রাখতে এবং ডায়বেটিস রোগের উপকারেও সহায়তা করে কাজু বাদাম। কাজু বাদামের কিছু অসাধারণ উপকারিতা-
ওজন কমাতে- প্রচলিত ধারণা অনুসারে যে কোনও বাদাম ওজন বাড়ায়! হ্যাঁ, বাদামে প্রচুর ফ্যাট থাকে। তাই বেশিমাত্রায় বাদাম খেলে ওজন বাড়ে। তবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বাদাম খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত যাঁরা নিয়মিত কাজু বাদাম খান তাদের ওজন কিন্তু ঝরতে শুরু করে। কাজু এবং অন্যান্য বাদামে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপকারী ফ্যাট বিপাকক্রিয়ার হার বাড়ায়। ফলে শরীরে জমে থাকা ফ্যাট বার্ন করা সহজ হয়। তাছাড়া কাজু একবার খেলে দীর্ঘসময় পেট ভরে থাকার অনুভূতি দেয়। ফলে উলটোপালটা খাবার খাওয়ার দরকার পড়ে না। শরীরে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালোরিও প্রবেশ করে না। ফলে ওজনও বাড়ে না।
ত্বকের জন্য- কাজুতে রয়েছে তামা এবং পর্যাপ্ত মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তামা ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষের ধ্বংস হওয়া রোধ করে। ফলে নিয়মিত কাজু খেলে চেহার হয় উজ্জ্বল। এছাড়া কাজু বীজ থেকে প্রস্তুত কাজু তেলও ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কাজু তেলে সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং ফসফরাস প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এছাড়া রয়েছে প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালস যা ত্বকের টানটান ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে। সহজে বলিরেখা আসতে দেয় না। ত্বক রাখে টানটান।
চোখের জন্য- কাজুতে রয়েছে লুটেইন নামে উপকারী উপাদান। এছাড়া রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। দু’টি উপাদানই বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে চোখকে রক্ষা করে। দৃষ্টিশক্তিও উজ্জ্বল করে। এছাড়া কাজুতে রয়েছে বিশেষ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জিয়াজ্যান্থিন যা চোখের ম্যাকুলা অংশের ক্ষয় রোধ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ফিল্টার হিসেবে কাজ করে সূর্যের রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার চোখকে রক্ষা করে।
মাইগ্রেন- ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিতে শরীরে দেখা দিতে পারে একাধিক অসুখ। নিয়মিত কাজু খেলে শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রায় ভারসাম্য আসে। কাজু ভিটামিন ই-এর একটি ভালো উৎস যা স্নায়ু কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে মাইগ্রেনের মতো মাথাব্যথার সমস্যা কমতেও সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ- প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিনের উৎস হল কাজু। উপাদানটি এক ধরনের ফ্ল্যাভোনল যা শরীরে ক্যান্সার কোষের প্রতিলিপি তৈরিতে বাধা দেয়।
হার্টের অসুখ প্রতিরোধে- কাজুতে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড এবং অসম্পৃক্ত চর্বি যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রক্তনালীগুলিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফলে হার্টের সমস্যাও প্রতিরোধ করা যায়।
কাজু বাদাম সরাসরি বাদাম হিসেবে বা টেস্ট বৃদ্ধি বা মুখরোচক হিসেবে রোস্টেড করে খাওয়া যেতে পারে। এম্নিতেও কাচা বাদামও বেশ মজার খেতে। এছাড়াও এটি বিভিন্ন রান্নায় সরাসরি বা বেটে ব্যবহার করা হয়।
কাজু বাদামের অপকারিতা-
কোনো ব্যক্তির যদি অ্যালার্জির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির কাজু বাদাম থেকে দূরে থাকাই ভালো। কাজু বাদামে রয়েছে উচ্চ অক্সালেট। বেশি পরিমাণ অক্সালেট আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে। তাই কিডনিতে সমস্যা রয়েছে যাদের সেই সকল ব্যক্তির কাজু বাদাম থেকে দূরে থাকা ভালো।
কোথায় পাবেন ভালোমানের আস্ত/ভাঙ্গা দেশি, রোস্টেড বা বিদেশি কাজু?
আমাদের কাছে পাবেন ভালোমানের সব কাজু বাদাম।