মসুরের ডাল হলো মূলত একধরনের খাদ্যশস্য। এটিকে সরাসরি খাওয়া যায়না। এটি পানিতে সেদ্ধ করে তেল-মশলার সহযোগে রান্না করে খাওয়া হয়। এটি ভারতের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য এবং পশ্চিমবঙ্গের বহুল প্রচলিত খাদ্য। ভারতে এই খাদ্যশস্যের প্রচুর চাষ হয়, সেই সাথে এটি আমাদের দেশে ভালো চাহিদা থাকায় এটি আমাদের দেশেও এখন অনেক চাষাবাদ হচ্ছে। ইন্ডিয়ান মসুর ডাল আকারে একটু বড় হয় সেই তুলনায় দেশি মসুর ডাল আকারে একটু ছোট। কিন্তু স্বাদের দিক থেকে দেশি ডাল'ই কিন্তু অসাধারণ।
দেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা মসুর ডাল নিসন্দেহে বেস্ট।
* মসুর ডালের উপকারিতা-
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নিয়োমিত মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাছাড়া মসুর ডাল ফলেট (folate) এবং ম্যাগনেসিয়াম এর একটা বিরাট উত্স, যা হার্টকে আরও বেশি তারুন্য পেটে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের সর্বত্র রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি প্রবাহ করতে সাহায্য করে।
মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার এটা দ্রবণীয় ফাইবার থকে যা রক্তের কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি আপনার শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে আপনার ধমনীকে পরিষ্কার রাখে।
মসুর ডালের ফাইবারে আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শরীর চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তাছাড়া এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ রয়েছে। ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার।
বাড়তি ওজন কমাতে চাইলে ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তার বদলে নিয়মিত ডাল খেতে পারেন। এতে ক্ষুধা হ্রাস পাওয়াসহ ভরাপেটের অনুভূতি থাকবে দীর্ঘক্ষণ। এছাড়াও মসুর ডাল খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে বাড়িয়ে দেয় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ।
ডালে একসঙ্গে আয়রন ও ফলেট দুটিই পাওয়া যায়। গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই দুটি উপাদান বেশ প্রয়োজনীয়। সেই সঙ্গে আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
* মসুর ডাল খাবার পদ্ধতি-
মসুর ডাল একটি খাদ্যশস্য তাই এটি সরাসরি খাওয়া যায়না। মসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা হয় নানা রকমের পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার। যেমন- ডালের চচ্চড়ি, ডালনা, নিরামিষ, পিঁয়াজু, ডালপুরি, ডালের স্যুপ, আম ডাল, পুঁই ডাল ইত্যাদি। মসুর ডাল প্রোটিনের আধার বলে একে মাংসের বিকল্প হিসেবেও ধরা হয়। মসুর ডাল শুধু সুস্বাদুই নয় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। যেমন, খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি।
* মসুর ডালের ক্ষতিকর দিক-
মসুর ডাল বেশি খেলে এতে উপস্থিত ফাইবার পেট খারাপ করতে পারে। যাদের রক্তে ফসফরাসের পরিমাণ বেশি বা যারা কিডনি ও দুর্বল হাড়ের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের মসুর ডাল খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এতে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস রয়েছে, যে কারণে এটি রক্তে ফসফরাসের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। মসুর ডাল গ্লুটন মুক্ত।
বাজারে ইন্ডিয়ান মসুর ডাল বেশি হলেও এবং আকারের দিক থেকে বড় হলেও সবসময়ের জন্যেই আমাদের দেশী মসুর ডাল'ই সেরা। তাই দেশি মসুর ডাল অর্ডার করুন আজিই।