মেথি (Methi)বলতে আমরা মশলাকেই বুঝি (গাছের বীজ)। তবে হার্ব (শুকনো পাতা) বা স্যালাডের সবজি (সতেজ পাতা, অঙ্কুরিত বীজ) হিসেবেও মেথির ব্যবহার আছে। পাঁচফোড়নের অন্যতম উপাদান মেথি (Methi) স্বাদে একটু তিতকুটে। ভেজে নিলে তিতো ভাবটা চলে যায়। মেথিতে কী নেই—ভিটামিন কে, থায়ামিন, ফোলিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ভিটামিন এ, বি ৬। খনিজের মধ্যে আছে কপার, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেশিয়াম।
মেথির উপকারিতা-
ডায়াবেটিস রুখতে সাহায্য করে- শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে মেথির উপকারী ভূমিকা প্রমাণিত ইতোমধ্যে। এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে মেথিতে (4HO-Ile), যা ডায়াবেটিস রুখতে সাহায্য করে। তাই জন্য যাঁদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা মেথি ভেজানো জল বা সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খান। ক্যানসার রুখতেও মেথির ভূমিকা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আয়ুর্বেদ। পেটের গোলমালে মেথির রস কাজে আসে। মাথার খুসকি থেকে চুল পড়া—যে কোনও সমস্যায় ওষুধ মেথি। তেতকুটে মেথি পছন্দ না করলে মেথি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে। ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায় মেথি। সেটি খাওয়া যেতে পারে। খাবারের সঙ্গে মেথি মিশিয়ে খেতে হবে। খাওয়া যেতে পারে মেথির চা। ঈষদুষ্ণ গরম জলে মেথি মিশিয়ে দিব্যি খাওয়া যেতে পারে। তবে শুধু মেথি খেলেই হবে না। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
হরমোনের পরিমাণ বাড়ায়-শুধু ডায়াবেটিস নয়। মেথি মহৌষধ। মেথির রসে সাপোনিস ও ডায়োজেনিন নামে যৌগ পদার্থ আছে। মানুষের শরীরে হরমোনের পরিমাণ বাড়ায়। প্রতিদিন পরিমিত মেথির রস খেলে পুরুষের যৌনক্ষমতা বাড়ে।
কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে-মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়। মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো জল খেলে কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, মেথি (Methi) ভেজানো জল খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে ফাইবারে শরীরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষিদে কমে যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমলেই ওজন কমতে শুরু করে।
ত্বকের সমস্যায় সমাধান-মেথি দানাকে একটু গরম করে নারকেল তেলে ভিজিয়ে রেখে দেবেন সারা রাত। পরদিন সকালে ওই তেল দিয়ে চুলের গোড়া মালিশ করলে উপকার পাবেন ঠিক। মেথির নির্যাস মুখের ব্রন, ফুসকুড়ি কমায় বলে প্রসাধনীতেও ব্যবহার হয়। মেথিতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন, পটাসিয়াম, ভিটামিন সি ও নিয়াসিন। ত্বককে রাখে সতেজ, টানটান বার্ধক্য দূরে ঠেলে তারুণ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে। ভেজা পরিষ্কার কাপড়ে মেথিদানা গুঁড়ো করে ফোড়া, পোড়া ও বিভিন্ন চর্মরোগে ব্যবহার করলে উপকার মেলে। মুখের ব্রণ, কালো দাগ, ফুসকুড়ি উধাও। স্ট্রোকের প্রবণতা অনেকটা কমে যায়।
তবে মেথি ভিজিয়ে পিষলে পুষ্টি নষ্ট হয়ে যায়। রোদে শুকিয়ে নিয়ে খেলে মচমচে লাগবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে বা একগ্লাস জলে মেথি মিশিয়ে খান। আজ থেকেই। উপকার পাবেন হাতেনাতে।
৬ মাসের বেশি মেথি খাওয়া চলবে না। কারণ, বেশি মেথি খেলে কিছু সাইড এফেক্ট হতে পারে। ডায়ারিয়া, গ্যাস বা পেটের গন্ডগোল। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও শিশুদের মেথি না খাওয়াই ভালো।
কোথায় পাবেন মেথি দানা?
কেনাকাটায় পাবেন মেথি দানা সব অন্যান্য আরও যাবতীয় সকল জিনিসপত্র।